একটি অসাধারণ স্থিরচিত্রের জন্য টানা দশ বছরের কঠোর পরিশ্রম। ক্যামেরাবন্দী করেছেন বিরল ও হিংস্র এক বন্যপ্রাণীর মুগ্ধকর চাহনি। যা ক্যামেরার কৌশলী ফ্রেমে ধরা পড়েছে। আলোকচিত্রীর সেই পরিশ্রম বিফলে যায়নি। অর্জন করেছে এ বছরের সেরা ছবির গৌরব। নামিবিয়ার এক বিস্মৃত হীরা-শহর থেকে তোলা ওই ছবিটি কেবল একটি স্থিরচিত্র নয়, এটি যেন মানব সভ্যতার ক্ষয়িষ্ণুতার মাঝে বন্য প্রকৃতির নিঃশব্দ বিজয়ের এক অদ্ভুত প্রতিচ্ছবি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিএনএন। এতে বলা হয়, ২০২৫ সালে বন্যপ্রাণী ফটোগ্রাফিতে সেরা ছবির পুরস্কার পেয়েছেন আলোকচিত্রী উইম ভ্যান ডেন হিভার। নামিবিয়ার বিস্মৃত একটি হীরা-শহর থেকে ছবিটি তুলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই আলোকচিত্রী। সেখানে হিভার পরিত্যক্ত একটি ভবনের সামনে বিরল প্রজাতির একটি হায়েনার স্থিরচিত্র ক্যামেরাবন্দী করেছেন। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, হায়েনাটি হিভারের ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছে। আর রাতের আলো আধারিতে জন্তুটির পিছনে নিঃসঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বহু পুরনো ভাঙাচোড়া একটি ভবন।
মঙ্গলবার আয়োজকরা এক বিবৃতিতে বলেছে, উইম ভ্যান ড্যান হিভার ছবিটির ক্যাপশন দিয়েছে ‘ঘোস্ট টাউন ভিজিটর’। বাস্তবে ছবিটি দেখে তাই মনে হয়। টানা দশ বছর পরিশ্রম করে ক্যামেরা ট্যাপ প্রযুক্তির সহায়তায় এমন নান্দনিক এবং রোমাঞ্চকর ছবিটি তুলেছেন হিভার। ৬০ হাজার ৬৩৬টি স্থিরচিত্রের মধ্যে তারটি সেরা ছবির গৌরব অর্জন করেছে। বলা হচ্ছে, পৃথিবীর সবচেয়ে বিরল বাদামী হায়েনার ছবি তুলে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ফটোগ্রাফার।
নিশাচর এবং নিঃসঙ্গ হওয়ায় বাদামী এই হায়েনার দেখা পাওয়া অত্যন্ত দুষ্কর। তাই হিভার প্রাণীটির পদচিহ্ন অনুসরন করেন এবং ক্যামেরা ট্র্যাপ প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। ওয়াইল্ড ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার জুরির সভাপতি ক্যাথি মোরান বলেন, ছবিটি দেখিয়েছে কীভাবে একটি বন্যপ্রাণী জনবিরল শহরকে পুনরায় জনবহুল করে তুলেছে। বিবৃতিতে ওই নারী বলেন, আশ্চর্যের বিষয় ছবিটি একটি ভূতুড়ে শহরেই তোলা হয়েছে। আপনি ছবিটির দিকে তাকালেই আপনার শরীরে কাঁটা দিবে এবং বুঝতে পারবেন আপনি কোনো হায়েনার শহরে আছেন। জুরি বোর্ডের আরেক সদস্য বলেছেন, ছবিটি যেন মানব সভ্যতার ওপর বন্য প্রকৃতির নিঃশব্দ বিজয়ের অদ্ভুত এক প্রতিচ্ছবি। তিনি আরও বলেন, ছবিটি একাধারে ভয়ঙ্কর ও মন্ত্রমুগ্ধকর। কারণ ক্ষয়িষ্ণুতার মাঝেও হায়েনাটি সেখানে নিঃসঙ্গ জীবনীশক্তির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। (বিনোদন ডেস্ক)